মোটা হওয়ার সহজ উপায় কী? চলুন জেনে নেই


বর্তমান যুগে সবাই সুন্দর শারীরিক গঠন চায়। কেউ এই ওজন কম বা বেশি বহন করতে চাই না। তাই মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলো জানা থাকলে মন্দ হয় না। তাই মোটা হতে হলে কি কি করতে হবে সেগুলো জানা প্রয়োজন তবেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যাবে। বর্তমান যুগে সবাই সুন্দর শারীরিক গঠন চায়।

শরীরের গঠন মোটা বা চিকন এ নিয়ে সকলেরেই কথা শুনতে হয়। চিকন শরীরের অধিকারীরা সবসময় শুনে –

“তুমি তো তাল পাতার সেপাই”।

‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’ । যেখানে স্বাস্থ্যই যদি পরিপূর্ণ না থাকে তবে কষ্ট টা মনের গহীন অবধি পৌঁছায়। তখন, ”মোটা হতে চাওয়া,”- এটাই মনোকামনা থাকে অনেকের। চলুন জেনে নেই মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলো কী কী?

মোটা হওয়ার উপায়ঃ

মোটা হতে হলে আপনাকে নিদির্ষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। একটু মন থেকে চেষ্টা করতে হবে,তবে মোটা হওয়া যাবে।

দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুনঃ

নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন। দুশ্চিন্তা স্বাস্থ্যহানীর অন্যতম কারণ। সুতরাং নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে নিজেকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করতে মাঝে মাঝে মেডিটেশন বা যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। যোগ ব্যায়াম দুশ্চিন্তা দূর করে।

ব্যায়াম করতে পারেনঃ

চিকন হওয়ার অন্যতম উপায় নিয়মিত ব্যায়াম করা। ঠিক তেমনি মোটা হতে হলেও ব্যায়াম করা প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে অতিরিক্ত চর্বি গলে যায় কিন্তু মাংসপেশি ফুলে উঠে। নতুন কোষের সৃষ্টি হয় ফলে ওজন বাড়ে।

ঘুমঃ

যারা মোটা হওয়ার সহজ উপায় জানতে চান তাদের জন্য অত্যাবশকীয় ও সহজ উপায় হল বেশি বেশি ঘুম। প্রতিদিন অন্তত ৮- ৯ ঘন্টা ঘুমান। বেশি বেশি ঘুমানোর ফলে ওজন একটু বৃদ্ধি পাবে।

ঘুমুতে যাওয়ার আগে সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ নিয়ম মেনে করতে পারেন। তার প্রতিদিন ই করতে হবে। তাহলে ফলাফল খুব তাড়াতাড়ি চোখে পরবে। ঘুমানোর আগে আপনি দুধ খেতে পারেন এবং দুধের সাথে মুধ মিশিয়ে খেলে কার্যকরি ফলাফল পাওয়া যায়। দুধ একটি আদর্শ খাদ্য। আর মুধতে পুষ্টি গুণ আমরা সবাই জানি।

বিশ্রামঃ

মোটা হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই বেশি বেশি বিশ্রাম করতে হবে।একটু অলস বা শুয়ে বসে সময় কাটালে মোটা হতে দেখা যায়।ওজন বৃদ্ধি জন্য বিশ্রাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ক্ষুধাঃ

ওজন বাড়ানোর জন্য একটু ক্ষুধা বাড়াতে হবে। সবসময় বিশ্রাম নিলে যেমন ওজন বাড়ে মাঝে মাঝে তেমনি ক্ষুধা কমে যায়। তাই বিশ্রামের পাশাপাশি ক্ষুধা বাড়াতে কিছু ব্যায়াম করা যায়। যা আপনার শরীলের ক্ষুধা বৃদ্ধি করবে ফলে ওজন টা একটু বাড়তে পারে।

একটু পর পর খাবারঃ

বারবার খাবার আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। ২ঘন্টা পর পর অল্প অল্প খাবার ওজন বৃদ্ধির সহায়ক। হজম হয় সহজে এবং পুষ্টি গুনে ভরপুর এমন খাবার বারবার খেতে হবে। এজন্য ছানা,দই,মিষ্টি, দুধ,ফল খাওয়া যেতে পারে।

খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবেঃ

প্রথম অবস্থা খাবার খেতে ইচ্ছে না হতে পারে। তবে আস্তে আস্তে খাবার বাড়াতে হবে। বিভিন্ন শাকসবজি খেতে পারেন। তাতে হজম হয় তাড়াতাড়ি।

শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বাড়াতে হবেঃ

মানুষের প্রধান খাদ্য শর্করা। শর্করা দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে। শর্করার ২টি উৎস আছে। তা হল উদ্ভিজ ও প্রাণীজ। দুটো উৎসকে সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত ওজন বৃদ্ধির জন্য।

এছাড়া প্রাণীর মাংস ও দুধে রয়েছে প্রচুর প্রাণীজ শর্করা। শর্করা মোটা হওয়ার সহজ উপায়গুলোর মধ্যে এক অভিনব উপায়। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের এক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার মোটা হতে সাহায্য করে
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
  • উদ্ভিজ উৎসগুলোর মধ্যে, ধান,গম,ভুট্টা ও অন্যান শস্য। আলু, রাঙাআলু, কচু এগুলো প্রচুর শ্বেতসার রয়েছে।
  • আঙ্গুর,আপেল,গাজর ও খেজুরে রয়েছে গ্লুকোজ যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক।
  • আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু, মিষ্টি ফলে ও ফুলের মধুতে ফ্রুকটোজ রয়েছে। এগুলোকে fruit suger বলে।
  • আখের রস, চিনি, গুড়, মিসরি সুক্রোজের উৎস।

আমিষ বা প্রোটিনঃ

আমিষ বা প্রোটিন ওজন বৃদ্ধির জন্য কার্যকরি। আমিষের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। উৎপত্তিগতভাবে আমিষও শর্করার মত দুই প্রকারঃ-

  • মাছ, মাংস, ডিম,দুধ, ছানা, পনির ইত্যাদি প্রাণিজ আমিষ।
  • ডাল, শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বাদাম উদ্ভিজ আমিষের উদাহরণ।
ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার
ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার

স্নেহ বা লিপিডঃ

চর্বিসহ মাংস, মাখন, ঘি, পনির, ডিমের কুসুম ইত্যাদি ওজন বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন তেল, বাদাম, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ড্রাই ফ্রুটসঃ

কিছুক্ষণ পর পর ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া যায়। তাতে মন ভালো থাকে, ওজন বৃদ্ধিতে ড্রাই ফ্রুটস অতুলনীয়। এগুলো এখন বাজারে অতি সহজে পাওয়া যায়।

গুরুত্বপূর্ণ খাবারঃ

গুরুত্বপূর্ণ খাবারগুলো একটু দেখে নেওয়া যাক। আলু, ভাত, ভাতের মাড়, ডিম, চিনি মিশ্রিত খাবার, বাদাম, কিসমিস,, শাকশবজি, গরুর মাংস, বেশি তেলের খাবার, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, দুধ, মাখন, ঘি। মোটা হতে চাইলে মোটা হওয়ার উপায়গুলো জানার পাশাপাশি ওজন কমার কারণগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে।ওজন কমার কারণগুলো জানা থাকলে মোটা হওয়াতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

ওজন কমার কারনগুলো হলঃ

অনিয়মিত খাদ্যাভাস, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, বয়স, জেনেটিক কারণে হতে পারে। বিভিন্ন রোগঃ ডায়ারিয়া, ডায়াবেটিস, যক্ষা, কিডনি সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, ক্যান্সার। বিভিন্ন নেশায় আসক্ত থাকা। এগুলোর জন্য ওজন বাড়ে না।

ফলে হাজার চেষ্টা ও মোটা হওয়া যায় না। তাই এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। সাথে অবশ্যই পানি খেতে হবে । পানি খাওয়ার অভ্যাস অনেক সমস্যার সমাধান করে। পর্যাপ্ত পানি খেলে স্বাস্থ্য সমস্যা অনেক কমে যায়।

এই অতি আধুনিক যুগে সবাই একটু বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। হোক সে মোটা, হোক সে চিকন। মোটা বা চিকন এই অতি পরিচিত শব্দগুলোকে আমরা একান্তে যত্ন নিতে পারি। আমরা সচরাচর চিকন হতে চাই একথাটাই বেশি শুনি। কিন্তু যারা একটু বেশি রোগাটে বা চিকন তাদের বেলায় কথাটা কিন্তু উল্টো। এমন অনেকের জানতে চাওয়া মোটা হওয়ার সহজ উপায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.